Header Ads

Logo Design by FlamingText.comLogo Design by FlamingText.com

ফজরের পরে যিকিরের ফযীলত

ফজরের পরে যিকিরের ফযীলত 

 সুন্নাতের পক্ষে
সুন্নাতের পক্ষে

 

 

 

 

আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলেন :


كَانَ رَسُوْلُ اللهِ  رسول الله صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى الْفَجْرَ لَمْ يَقُمْ مِنْ مَجْلِسِهِ حَتَّى تُمْكِنَهُ الصَّلاَةُ، وَقَالَ: مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ ثُمَّ جَلَسَ فِيْ مَجْلِسِهِ حَتَّى تُمْكِنَهُ الصَّلاَةُ كَانَ بِمَنْزِلَةِ عُمْرَةٍ وَحَجَّةٍ مُتَقَبَّلَتَيْنِ.
“রাসূলুল্লাহ (সা.) ফজরের সালাতের পর (সূর্য পুরোপুরি উঠে মাকরুহ ওয়াক্ত শেষ হয়ে) সালাত জায়েয হওয়ার সময় পর্যন্ত তাঁর বসার স্থান থেকে উঠতেন না। তিনি বলেন: যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করার পরে সালাত জায়েয হওয়ার সময় পর্যন্ত তাঁর বসার স্থানে বসে থাকবে সে একটি মাকবূল হজ্ব ও একটি মাকবূল উমরার সাওয়াব পাবে।” হাদীসটি  গ্রহণযোগ্য।
তাবারানী, আল-মু’জামুল আউসাত ৫/৩৭৫, আলবানী, সহীহুত তারগীব ২/২৬১


 জাবির ইবনু সামুরাহ (রা) বলেন :

كَانَ النَّبِيُّ  رسول الله صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى الْفَجْرَ تَرَبَّعَ فِي مَجْلِسِهِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ حَسْنَاءَ
“রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন ফজরের সালাত আদায় করতেন তখন সূর্য ভালভাবে উঠে যাওয়া পর্যন্ত তাঁর বসার স্থানে আসন গেড়ে বা পায়ের উপর পা মুড়ে (cross-legged) বসে থাকতেন।”
মুসলিম (৫-কিতাবুল মাসাজিদ, ৫২-বাব ফাদলিল জুলূস) ১/৪৬৪ (ভারতীয় ১/২৩৫); আবূ দাউদ (কিতাবুল আদব, বাব.. ইয়াজলিস মুতরাব্বিয়ান) ৪/২৬৪, নং ৪৮৫০ (ভারতীয় ২/৬৬৬)।

 অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন: 

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ  رسول الله صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى الْفَجْرَ جَلَسَ فِي مُصَلاَّهُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ [فَإِذَا طَلَعَتْ الشَّمْسُ قَامَ] فَيَتَحَدَّثُ أَصْحَابُهُ يَذْكُرُونَ حَدِيثَ الْجَاهِلِيَّةِ وَيُنْشِدُونَ الشِّعْرَ وَيَضْحَكُونَ وَيَتَبَسَّمُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
“রাসূলুল্লাহ (সা.) ফজরের সালাত আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত তাঁর সালাতের স্থানে বসে থাকতেন। সূর্যোদয়ের পরে তিনি উঠতেন। তাঁর বসা অবস্থায় সাহাবায়ে কেরাম কথাবার্তা বলতেন, জাহেলী যুগের কথা বলতেন, কবিতা পাঠ করতেন এবং হাসতেন। আর তিনি শুধু মুচকি হাসতেন।”
 মুসলিম (৫-কিতাবুল মাসাজিদ, ৫২-বাব ফাদলিল জুলূস) ১/৪৬৩ (ভারতীয় ১/২৩৫)।



 উমার (রা) বলেন :

كَانَ رَسُوْلُ اللهِ  رسول الله صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى الصُّبْحَ جَلَسَ فِيْ مُصَلاَّهُ وَجَلَسَ النَّاسُ حَوْلَهُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ دَخَلَ عَلَى نِسَائِهِ امْرَأَةً امْرَأَةً يُسَلِّمُ عَلَيْهِنَّ وَيَدْعُوْ لَهُنَّ.
“রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন ফজরের সালাত আদায় করতেন তখন তাঁর সালাতের স্থানে বসে থাকতেন। মানুষেরা তাঁর আশেপশে  বসতেন। সূর্যোদয় পর্যন্ত তিনি এভাবে থাকতেন। এরপর তিনি একে একে তাঁর সকল স্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাঁদেরকে সালাম দিতেন ও তাঁদের জন্য দু‘আ করতেন।”
তাবারানী, আল-মু’জামুল আউসাত ৮/৩২৪, মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/৮, ফাতহুল বারী ৯/৩৭৯। 

আল্লামা হাইসামীর পর্যালোচনায় হাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য।


আনাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন :

 لأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ تَعَالَى مِنْ صَلاةِ الْغَدَاةِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَعْتِقَ أَرْبَعَةً مِنْ وَلَدِ إِسْمَعِيلَ وَلأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ مِنْ صَلاةِ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَيَّ مَنْ أَنْ أَعْتِقَ أَرْبَعَة.
“ফজরের সালাতের পরে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর যিক্রে রত কিছু মানুষের সাথে বসে থাকা আমার কাছে ইসমাঈল (আ)-এর বংশের চারজন ক্রীতদাসকে মুক্ত করার চেয়ে বেশি প্রিয়। অনুরূপভাবে আসরের সালাতের পরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর যিক্রে রত কিছু মানুষের সাথে বসে থাকা আমার কাছে চারজন ক্রীতদাস মুক্ত করার চেয়েও বেশি প্রিয়।” হাদীসটি হাসান।
আবূ দাউদ (কিতাবুল ইলম, বাব ফিলকাসাস) ৩/৩২২ (ভা ২/৫১৬); আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/২৬০।

রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর পরে সাহাবীগণও সুযোগমতো ফজরের সালাতের পরে মসজিদে বা ঘরে সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে ব্যক্তিগতভাবে যিক্র ওযীফায় রত থাকতে ভালবাসতেন। তাবেয়ী মুদরিক ইবনু আউফ বলেন, আমি চলার পথে দেখলাম  বিলাল (রা) ফজরের সালাত আদায় করে বসে রয়েছেন। আমি বললাম, “বসে রয়েছেন কেন?” তিনি বললেন : “সূর্যোদয়ের জন্য অপেক্ষা করছি।”
মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১০৭। সনদ সহীহ।

তাবেয়ী আবু ওয়াইল বলেন : 

سَأَلْتُ ابْنَ مَسْعُوْدٍ ذَاتَ يَوْمٍ بَعْدَ مَا انْصَرَفْنَا مِنْ صَلاَةِ الْغَدَاةِ فَاسْتَأْذَنَّا عَلَيْهِ قَالَ ادْخُلُوا قُلْنَا نَنْتَظِرُ هُنَيَّةً لَعَلَّ بَعْضَ أَهْلِ الدَّارِ لَهُ حَاجَةٌ فَأَقْبَلَ يُسَبِّحُ وَقَالَ لَقَدْ ظَنَنْتُمْ بِآَلِ عَبْدِ اللهِ غَفْلَةً ثُمَّ قَالَ يَا جَارِيَةُ انْظُرِيْ هَلْ طَلَعَتِ الشَّمْسُ قَالَتْ لاَ ثُمَّ قَالَ لَهَا الثَّالِثَةَ انْظُرِيْ هَلْ طَلَعَتِ الشَّمْسُ قَالَتْ نَعَمْ قَالَ الْحَمْدُ للهِ الَّذِيْ وَهَبَنَا هَذَا الْيَوْمَ وَأَقَالَنَا فِيْهِ عَثَرَاتِنَا أَحْسِبُهُ قَالَ وَلَمْ يُعَذِّبْنَا بِالنَّارِ.
আমি একদিন ফজরের সালাতের পরে ইবনু মাস’ঊদ (রা)-কে প্রশ্ন করলাম। আমরা তার ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলাম। তিনি বললেন: “প্রবেশ কর”। আমরা বললাম: “কিছু একটু দেরি করি, হয়ত বাড়ির কারো কোনো প্রয়োজন থাকতে পারে।” তখন তিনি তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ) পাঠ করতে করতে আমাদের দিকে আসলেন এবং বললেন, সম্ভবত তোমরা আব্দুল্লাহর পরিবার ইবাদতে গাফলতি করে বলে ধারণা করেছিলে? এরপর তিনি তার দাসীকে বললেন: “দেখ তো সূর্য উঠেছে কিনা।” সে বলল: “না।” পরে তৃতীয়বার তিনি তাকে বললেন: “সূর্য উঠেছে কিনা দেখ।” তখন সে বলল: “হাঁ, সূর্য উঠেছে।” তখন তিনি বললেন: “আল্লাহর সকল প্রশংসা, যিনি আমাদেরকে এ দিনটিও উপহার দিলেন। তিনি এ দিনে আমাদেরকে ভুলত্র“টিগুলো ক্ষমা করলেন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি প্রদান করলেন না।” বর্ণনাটির সনদ সহীহ।
তাবারানী, আল-মু’জামুল কাবীর ৯/১৮২-১৮৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১১৮।

অন্য একটি দুর্বল বর্ণনায়  ইবরাহীম নাখয়ী বলেন, “আব্দুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদকে (রা) দেখেছেন এমন একজন আমাকে বলেছেন, তিনি একবার তাকে দেখেছেন যে, তিনি ফজরের সালাত আদায় করে বসে থাকলেন। তিনি যোহর পর্যন্ত আর উঠলেন না কোনো নফল সালাতও পড়লেন না। যোহরের আযান হলে তিনি উঠে (যোহরের সুন্নাত) চার রাক’আত আদায় করলেন।”

No comments

Powered by Blogger.